আজকের পোস্টে শেয়ার করবো “বৃক্ষচ্ছেদন ও তার প্রতিকার” মনে রাখবে এটি একটি বাংলা রচনা এই বৃক্ষচ্ছেদন ও তার প্রতিকার বাংলা প্রবন্ধ রচনা তোমাদের আগত বিভিন্ন পরীক্ষায় বিশেষ সহায়তা করবে।

বৃক্ষচ্ছেদন ও তার প্রতিকার বাংলা প্রবন্ধ রচনা
“অর্থ ভূমি গর্ভ থেকে শুনেছিলে সূর্যের আহ্বান
প্রাপ্তের প্রথম জাগরণে তুমি বৃক্ষ, আদিপ্রাপ
ঊর্ধ্বনীর্ষে উচ্চারিলে আলোকের প্রথম বন্দনা
হান্দাহীন পাসাদের বক্ষ ‘পরে..।”
ভূমিকা:
শত শত কোটি বছর পূর্বে যখন জীবনমৃত্যুর সম্মুখ সমরে বাসযোগ্য জলবায়ু সৃষ্টি হয় তখন ধরিত্রীর বন্ধ্যাঞ্চলে যে প্রথম প্রাণের জোয়ার লাগে তার নাম ছিল সবুজ উদ্ভিদ। পরবর্তীকালে পৃথ্বীজননীর কনিষ্ঠ সন্তান মানুষ আবির্ভূত হলে অরণ্যভূমি পরম আশ্লেষে তাকে মাতৃস্নেহে লালন করেছে। কিন্তু আজ সেই মাতৃকাই বিপর্যয়মুখী।
ঋণী মানবসমাজ ও জাতি:
আদিম কাল থেকে লজ্জা নিবারণের জন্য বন্ধলদান, শাস্ত্র বিধানের জন্য পত্র প্রদান এমনকি যজ্ঞাদি সমাধাকল্পে বারংবার আত্মাহুতি প্রদান করেছে তরুদল। ঔষধ, দেব পদে সমর্পণের পুষ্প, এমনকি জীবের শ্বাসবায়ু—সবই প্রদান করে এই অরণ্যদেবী। তা ছাড়া পশুদের আবাসস্থল সৃজন করে জীববৈচিত্র্য সাধন, ভূমিক্ষয় রোধ, বৃষ্টিপাত নিয়ন্ত্রণ সব কিছুর সঙ্গেই বৃক্ষের অচ্ছেদ্য সংযোজন। আধুনিক বিশ্বে তাই বৃক্ষের বস্তুগত মূল্য অসীম।
সভ্যতার উন্মত্ততা ও অরণ্যভূমির বিনাশ:
সভ্যতার উন্মত্ততায় নগরায়ণের উদগ্র নেশায় কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত সর্বত্রই চলছে অরণ্যের নিধনযজ্ঞ। শ্যামল স্নেহের সম্পর্ককে সজোরে ছিঁড়ে ফেলে মানুষ প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসলীলায় আত্মনিয়োগে মত্ত। ফলে ঘাতকের শানিত কুঠারাঘাতে আজ বহু নিশ্ছিদ্র অরণ্য দিগন্তপ্রসারী মরুভূমিতে পর্যবসিত হয়েছে।
বনভূমি ধ্বংসের কারণ:
বর্তমান প্রযুক্তি নির্ভরতার যুগে জ্বালানির প্রয়োজনে বৃক্ষনিধন না করা হলেও পথঘাট, সেতু-সৌধ, আসবাবপত্র নির্মাণের জন্য পরিকল্পিতভাবে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন চলছে। তা ছাড়া দুর্মূল্য কাষ্ঠসম্পদ বিদেশে চালান করে অর্থসংগ্রহের লোভে একদল অসাধু ব্যবসায়ী ক্রমাগত বৃক্ষনিধন করছে।
বৃক্ষচ্ছেদনের কুপ্রভাব:
বৃক্ষচ্ছেদন তথা অরণ্য নিধনের মাত্রা এইভাবে ক্রমান্বয় বর্ধিত হতে থাকলে আগামী 15-20 বছরের মধ্যেই বহু কৃষিজমি, আবাদি জমি বন্ধ্যাদশা প্রাপ্ত হবে। বৃক্ষের অধিক কর্তনের ফলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাবে ও সালফার ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড, ক্লোরাইড প্রভৃতির দূষণক্রিয়া বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সেই সঙ্গে নগরজীবনে দুরারোগ্য ব্যাধির প্রবেশ ঘটবে। বৃক্ষের অভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রার পারদ ক্রমশই হবে ঊর্ধ্বগামী। আফ্রিকার সুদান বা আমাজন অববাহিকায়, হিমাচল প্রদেশ, সিমলা ও কালিম্পংয়ে যে অসুরের পদধ্বনি ইতোমধ্যেই শ্রুত হচ্ছে তা ধ্বনিত হবে পৃথিবীর সর্বত্র।
উপসংহার:
বর্তমান সভ্যতা বৃক্ষচ্ছেদনের কুপ্রভাব সম্বন্ধে বহুলাংশেই অভিজ্ঞ। তাই বর্তমানে বৃক্ষনিধন রোধ ও পুরাতন ক্ষতির পরিপূরণের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গৃহীত হচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলির অনুসরণে ভারতবর্ষেও সংঘটিত হচ্ছে চিপ্কো আন্দোলন, সরকার গ্রহণ করছে বহু স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। বস্তুত, ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’ এই প্রাণপ্রদায়ী ধ্বনিকে সঙ্গী করলেই প্রকৃতিতে আসবে প্রকৃত সমৃদ্ধি।
অনুসরণে লেখা যায় : 1. বৃক্ষচ্ছেদন : একটি অভিশাপ, 2 যন্ত্রসভ্যতা ও বৃক্ষচ্ছেদন।
আরও পড়ুন

HelpNbuExam বিগত ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নির্ভুল এবং কোয়ালিটি স্টাডি মেটিরিয়াল প্রদান করে আসছি। আমাদের লক্ষ্য হলো সহজ বাংলা ভাষায় জটিল বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেওয়া, যাতে প্রতিটি ছাত্রছাত্রী তাদের সরকারি চাকরির স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। WBCS, SSC, এবং রেলওয়ে পরীক্ষার লেটেস্ট আপডেট এবং স্ট্র্যাটেজির জন্য আমাদের সাথে থাকুন।
